Header Ads

Header ADS

মিন্নি মনে ক’রে তিন্নিকে জ’ড়িয়ে ধ’রেছিল জামিরুল! এরপর …

 

মিন্নি মনে ক’রে তিন্নিকে জ’ড়িয়ে ধ’রেছিল জামিরুল! এরপর …

বুধবার সকালে পু’লিশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ই’সলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাবেক শিক্ষার্থী উলফাত আরা তিন্নির মৃ’ত্যুর ঘ’টনায় প্রধান অ’ভিযুক্ত জামিরুলকে গ্রে’প্তার ক’রেছে পু’লিশ।

    

এদিকে তিন্নির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের বিভিন্ন জায়গায় ছ’ড়িয়ে-ছি’টিয়ে আছে তিন্নির বই-খাতা আর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া নানা ক্রেস্ট-পুরস্কার। সাদামাটা তিন্নির জীবন-যাপন ছিল সহজ সরল। প্রতিবেশীরা জানান, খুবই মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন তিন্নি।

    

খুবই হাসিখুশি ও সাদামাটা জীবন-যাপন ছিলো তার। এ ঘ’টনার সঙ্গে যারা জ’ড়িত তাদের দ্রুত গ্রে’ফতার ক’রে সর্বোচ্চ শা’স্তির আওয়তায় নেয়ার দা’বি তাদের। গত ১ অক্টোবর রাতে বড় বোন মিন্নির সাবেক স্বামী একই গ্রামের কনুরুদ্দীনের ছেলে জামিরুল তিন্নিদের বাড়িতে দুই দফা হা’মলা-ভা’ঙচুর ক’রে।

    

এসময় তিন্নির ওপর পাশবিক নি’র্যাতন চালানো হয়। পরে রাত ১২টার দিকে শোয়ার ঘর থেকে সিলিং ফ্যানে ঝু’লন্ত অবস্থায় তিন্নির ম’রদেহ উ’দ্ধার ক’রা হয়। ওই রাতে তিন্নির সঙ্গে যা ঘ’টে, তা উঠে এসেছে তার মা ও বোনের কথায়।

    

শনিবার সেসব কথা জানান তারা। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজে’লার শেখপাড়া গ্রামের মু’ক্তিযো’দ্ধা মৃ’ত ইউসুফ আলীর মেয়ে তিন্নি ই’সলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ছা’ত্রী ছিলেন।

    

নি’হত তিন্নির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তিন্নিরা তিন বোন। তার বাবা মৃ’ত ইউসুফ মু’ক্তিযো’দ্ধা ও সাবেক সে’না কর্মক’র্তা ছিলেন। ঝিনাইদহ জে’লার শৈলকূপা উপজে’লার শৈলকূপা থা’নাধীন যোগীপাড়া গ্রামের তাদের স্থায়ী নিবাস। তবে মাসহ তারা দুই বোন থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া বাজার সংলগ্ন নিজস্ব দোতলা বাসায়।

    

বড় বোনের আগেই বিয়ে হয়ে গেছে। তিন বোনের মধ্যে তিন্নি ছিলেন ছোট। মেঝ বোনের বিয়ে হয়েছিল তাদের এক কাজিন জামিরুলের সঙ্গে। তবে বিভিন্ন কারণে সে বিয়ে টে’কেনি। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শৈলকুপার শেখপাড়া গ্রামে নিজের ঘর থেকেই তিন্নির ম’রদে’হ উ’দ্ধার হয়।

    

মা হালিমা বেগম বলেন, ‘বৃহম্পতিবার তিন্নি এক বান্ধবীর বিয়ের অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়া গিয়েছিল। অনুষ্ঠান শে’ষে বাড়ি ফেরে রাত ৮টার দিকে। এর কিছু সময় পর মেজো মেয়ে মিন্নির তালাকপ্রাপ্ত স্বামী জামিরুল গো’পনে তিন্নির রুমে ঢোকে এবং খাটের নিচে লু’কিয়ে থাকে।

    

তিন্নি বাইরে থেকে এসে পোশাক বদল ক’রে বাসার নিচ তলায় তার সঙ্গে (মা হালিমার সঙ্গে) দেখা ক’রে, একটু বসে। এরপর ঘুমাতে তার রুমে যায়।’ তিন্নির মা ঘ’টনার বর্ণনা দিয়ে আরো বলেন, ‘এরপর তিন্নি বুঝতে পারে তার খাটের নিচে কেউ লু’কিয়ে আছে। লোকটি খাটের নিচ থেকে বের হয়ে এক পর্যায়ে তিন্নিকে জা’পটে ধ’রে। শুরু হয় ধ’স্তাধ’স্তি, এসময় চিৎ’কার দেয় তিন্নি। লোকটি ছিল জামিরুল।’

    

হালিমা বেগম বলেন, ‘আমরা তখন বুঝতে পারি বাসার চারপাশে জামিরুলের অনেক সহযোগী এবং তারা আমাদের বলতে থাকে- কোনও হৈ চৈ ক’রবি না। আজ সবাইকে মে’রে ফেলবো।’ এর পরের ঘ’টনার বর্ণনা দেন তিন্নির মেজো বোন মিন্নি।

    

তিনি জানান, বোনের চিৎ’কারে তিনি ছুটে যান তিন্নির রুমের সামনে। কিন্তু রুম ছিল ভেতর থেকে আ’টকানো। মিন্নি বলেন, ’অনেক চে’ষ্টা ক’রে দরজার লক ভে’ঙে ভেতরে ঢুকে দেখি সেখানে জামিরুল। তখনো তারা ধ’স্তাধ’স্তি ক’রছে। বা’ধা দিতে গেলে সে আমাকে মা’রতে আসে।

আমি অন্য রুমে গিয়ে আ’ত্মর’ক্ষা ক’রি। এরপর অনেক সময় চলে তিন্নির রুমে তা’ণ্ডব। পরে রুম থেকে বের হয়ে আমাকে ও আমার মাকে খুঁ’জতে থাকে সে। এক পর্যায়ে প্রতিবেশীদের উপস্থিতি টে’র পেয়ে রাত ১১টার দিকে জামিরুল পা’লিয়ে যায়।’

মা হালিমা বেগম জানান, ‘জামিরুল বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পর তিন্নি নিচে তার রুমে আসে। আমাকে সে প্রশ্ন ক’রে- বাইরের লোক কেন আমার রুমে প্রবেশ ক’রল মা? আমার তো সব শে’ষ! আমার আর বেঁ’চে থেকে কী লাভ? এই বলে সে নিজের রুমে চলে যায়। এরপর পর রাত ১২টার দিকে টের পাই তিন্নি রুমে ফ্যানের সঙ্গে ঝু’লছে’- বলেন মা হালিমা বেগম।’

এক প্রশ্নের জবাবে মিন্নি জানান, জামিরুল যখন তার স্বামী ছিলেন তখন এই বাড়িতে এলে ওই রুমেই থাকতেন এবং জামিরুল হয়তো ভেবেছিলেন এখনও তিনি (মিন্নি) ওই রুমেই থাকেন। মিন্নি বলেন, ‘আমাকে তুলে নিতে বা মে’রে ফেলতে সে এ রুমে লু’কিয়ে ছিল।

তালাকের পর সে বি’শ্বাস ক’রেনি- আমার আবার বিয়ে হয়েছে। সে আমাকে ফিরিয়ে নিতে চে’ষ্টা চালাতে থাকে। আমার কাছ থেকে মেয়েকে সে জো’র ক’রে তার কাছে নিয়ে যায়। এ নিয়ে কয়েকবার তিন্নির সঙ্গে তার কথা কা’টাকা’টি হয়।’ তিন্নিদের ভাই না থাকায় চাক’রি পেয়ে পরিবারের হাল ধ’রতে চেয়েছিলেন তিন্নি।

কাঁ’দতে কাঁ’দতে তিন্নির মা বলেন, ‘আমি আর কী নিয়ে থাকবো। অনেক চে’ষ্টা ক’রেছি তাকে বিয়ে দিতে। কিন্তু সে কোনো সময় রাজি হয়নি। শুধু বলতো, মা দো’য়া ক’রো আমি চাক’রি পেয়ে সংসারের যেন হাল ধ’রতে পারি।’

সূত্র জানায়, সম্প্রতি জামিরুল আবারও তিন্নির মেঝ বোনকে ঘরে তুলতে চায়। তবে এ বিষয়ে তিন্নিদের আ’পত্তি থাকায় উভয়পক্ষে কথা কা’টাকা’টি হয়। ঘ’টনার দিন সন্ধ্যার দিকেও জামিরুল ও তার অন্য সঙ্গীরা এসে তাদের বাসায় হা’মলা চালায়। এর দু’ঘণ্টা পর জামিরুল আবারও ওই বাসায় আসে এবং তিন্নি বোন ও মাকে নিচের ঘরে আ’টকে রেখে দোতলায় তিন্নির ঘরে ঢোকে।

সেখানে আ’পত্তিক’র আ’চরণ ক’রার পর জামিরুল চলে যায়। এরপর থেকেই ঘরের দরজা ব’ন্ধ ছিল তিন্নির। তিন্নির স্বজনদের অ’ভিযোগ, তার বোনের সাবেক স্বামী শেখপাড়া গ্রামের কুনুরুদ্দীনের ছেলে জামিরুল ও তার তিন সহযোগী জো’র ক’রে তিন্নিদের বাড়িতে ঢুকে ভা’ঙচুর চালায়। এসময় তিন্নির শোবার ঘরে ঢুকে তার শ্লী’লতাহানি ক’রায় আ’ত্মহ’ত্যার পথ বেছে নেন তিনি।

ঘরে ঢুকে নি’র্যাতন ও তার র’হস্যজনক মৃ’ত্যুর ঘ’টনায় শৈলকুপা থা’নায় না’রী ও শি’শু নির্যা’তন এবং ও আ’ত্মহ’ত্যায় প্র’রোচনার অ’ভিযোগে তার মায়ের দা’য়ের ক’রা মা’মলায় চারজনকে গ্রে’প্তার ক’রেছে পু’লিশ। শুক্রবার রাতে তাদের গ্রে’প্তার ক’রা হয়। তবে এ ঘ’টনায় মূল অ’ভিযুক্ত জামিরুল প’লাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।

আ’টককৃতরা হলো- শেখপাড়া এলাকার কনুর উদ্দিনের ছেলে আমিরুল, নজরুল, লাবিব ও তন্ময়। শৈলকুপা থা’নার ওসি (ত’দন্ত) মহসিন হোসেন জানান, ‘রাত সাড়ে বারোটার দিকে ফোন দিয়ে ঘ’টনাটি জানায় তার পরিবার। পু’লিশ ঘ’টনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই পরিবারের সদস্যরা ভিক্টি’মকে উ’দ্ধার ক’রে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে রাত দুইটার দিকে তার মৃ’ত্যুর খবর জানতে পারি আমরা।

কোন মন্তব্য নেই

graphixel থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.